খুলনা, বাংলাদেশ | ১৬ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  সুনামগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে আগুন, একই পরিবারের ৬ জনের মৃত্যু
  লেবাননে স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল

সূরা নূরে নারী-পুরুষের জীবনের যে বিধান নিয়ে আলোচনা হয়েছে

গেজেট ডেস্ক 

সূরা নুর, সূরা আহযাব এবং সূরা নিসা – এমন তিনটি সূরা যেখানে মহিলাদের বিশেষ সমস্যাবলী এবং সামাজিক ও দাম্পত্য জিবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিস্তারিতভাবে আলোচিত হয়েছে।

এই সূরার অধিকাংশ বিধান সতীত্বের সংরক্ষণ ও পর্দাপুশিদা সম্পর্কিত। এরই পরিপূরক হিসেবে ব্যভিচারের শাস্তি বর্ণিত হয়েছে। এর আগের সূরা, সূরা আল মুমিনুনে মুসলমানদের দুনিয়া ও পরকারে সাফল্য যেসব গুণের ওপর নির্ভরশীল তার আলোচনা করা হয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম একটি হলো যৌনাঙ্গকে সংযত রাখা। এটাই সতীত্ব অধ্যায়ের সারমর্ম। এ সূরায় সতীত্বকে গুরুত্ব দেওয়া ও এ সম্পর্কিত বিধান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাই নারীদের এই সূরা বিশেষভাবে শিক্ষা দেওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর ফারুক রা. কুফাবাসীদের নামে একটি আদেশনামা লিখেছিলেন, এতে তিনি বলেছেন, তোমাদের নারীদেরকে সূরা আন-নুর শিক্ষা দাও। এ সূরার শুরুর আয়াতে সেদিকেই ঈঙ্গিত করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে,

سُوۡرَۃٌ اَنۡزَلۡنٰهَا وَ فَرَضۡنٰهَا وَ اَنۡزَلۡنَا فِیۡهَاۤ اٰیٰتٍۭ بَیِّنٰتٍ لَّعَلَّكُمۡ تَذَكَّرُوۡنَ

এটি একটি সূরা, যা আমি নাযিল করেছি এবং এটাকে অবশ্য পালনীয় করেছি। আর আমি এতে সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ নাযিল করেছি, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। (সূরা নুর, আয়াত : ১)

এছাড়াও হজরত মুজাহিদ রহ. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা পুরুষদের সূরা মায়েদা আর নারীদের সূরা নূর শেখাও। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা সূরাটি নারীদের শেখানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।

এ সূরায় মোটামুটি ১০টি বিধান সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। এরপর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় বিধান ব্যভিচারের শাস্তি সম্পর্কে। ব্যভিচারী নারী-পুরুষ যাদি অবিবাহিত হয় তা হলে তাদের একশ বেত্রাঘাত করা হবে। এটি কোরআন দ্বারা প্রমাণিত। আর যদি তারা বিবাহিত হয় তা হলে তাদেরকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করা হবে। এটি সুন্নাতে মুতাওয়াতিরা ও সাহাবিদের ইজমা দ্বারা প্রমাণিত।

তৃতীয় বিধানটি অপবাদ সংক্রান্ত। চতুর্থ বিধানটি স্বামী-স্ত্রীর জন্য। স্বামী যদি স্ত্রীর ওপর অপবাদ আরোপ করে; এবং তার নিকট যদি চারজন সাক্ষী না থাকে তা হলে একে অপরের উপর লানত করবে। এরপর তাদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো হবে।

পঞ্চম বিধানটি ইফকের ঘটনা সম্পর্কিত। হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার ওপর কিছু মুনাফিকের অপবাদ আরোপের প্রেক্ষিতে এ বিধান অবতীর্ণ হয়।

ষষ্ঠ বিধানটি ঘরে প্রবেশের অনুমতি ও আদব সংক্রান্ত। বলা হয়েছে, কারো ঘরে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করবে না। প্রবেশের পূর্বে সালাম দেবে।

সপ্তম বিধানটি মুমিন নারীদের সম্পর্কে। বলা হয়েছে, তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি অবনত রাখে। লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। অষ্টম বিধানটি স্বাধীন নারী-পুরুষ ও গোলামদের মধ্যে যারা বৈবাহিক অধিকার আদায়ে সক্ষম তাদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া বিষয়ে।

নবম বিধানটি বাঁদি ও গোলামদের ব্যাপারে। ইসলাম আসার পূর্বেই যুদ্ধবন্দিদের গোলাম বানানোর প্রচলন ছিল। গোলাম-বাঁদিদের উপর সীমাহীন জুলুম করা হতো। ইসলাম এ প্রথাতে বহু পরিবর্তন এনেছে। গোলাম-বাঁদিদের ওপর নির্যাতনের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। অন্যান্য মানুষের মতো তাদের অধিকার সাব্যস্ত করেছে। তাদের আজাদ করে দেওয়াকে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের কারণ বলে উল্লেখ করেছে।

দশম বিধানটি জাহেলিযুগের উপার্জনের হারাম রাস্তা বন্ধ করার জন্য দেওয়া হয়।

দশটি বিধান ও আদব উল্লেখ করার পর ঈমান-আকিদা এবং হকের নূর সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে, যে নূরের মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহ হেদায়েত দিয়ে থাকেন।

এরপর মুমিন ও মুনাফিকদের সম্পর্কে তুলনামূলক পর্যালোচনা করা হয়েছে। মুনাফিকরা ঈমান ও আনুগত্যের মিথ্যা দাবি করে থাকে। কিন্তু যখন আল্লাহ ও তার রাসূলের কথা মানতে গিয়ে তারা কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হয় তখন তারা বিমুখ হয়ে যায়। পক্ষান্তরে মুমিনগণ সর্বাবস্থায় আল্লাহর রাসূলের অনুসরণ করে।

এরপর সামাজিক জীবন সম্পর্কে আরও তিনটি বিধান দেওয়া হয়েছে।

খুলনা গেজেট/এএজে




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!